শনিবার ০৫ অক্টোবর ২০২৪ ||
আশ্বিন ২০ ১৪৩১
|| ৩০ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬
দৈনিক বান্দরবান
প্রকাশিত: ১০ জানুয়ারি ২০১৯
পরিসংখ্যান জানাচ্ছে, বর্তমানে প্রায় ১৭ কোটি মানুষের বাংলাদেশে মোট জনসংখ্যার শতকরা ৬৫ ভাগের বয়সই এখন পঁয়ত্রিশ বছরের নিচে। দেশের রাজনীতি থেকে শুরু করে সামনের দিনগুলোতে বাংলাদেশকে প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ বিভাগে এগিয়ে নেয়ার জন্য ওই তরুণদের নেতৃত্বে আসার সময়ও হয়েছে। দেশি-বিদেশি গবেষকদের মতোই দেশের ভবিষ্যত গড়তে তরুণদের প্রচুর সম্ভাবনা দেখেছেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে টানা তৃতীয়বারের মতো নতুন করে সরকার গঠন করে মন্ত্রীসভায় দেখিয়েছেন চমক। ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে উন্নিত হওয়ার লক্ষ্যে তারুণ্য শক্তি মতাদর্শে মন্ত্রীসভায় প্রায় এক তৃতীয়াংশেরও ওপর তরুণদের স্থান করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। দেশের ৬৫ শতাংশ কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীর মধ্যে বড় অংশ তরুণরা। শিক্ষিত বিকশিত মেধাবী প্রজন্মের পক্ষেই স্থূল রাজনীতির দুষ্টচক্র থেকে দেশকে বের করে আনা সম্ভব বলে মনে করছেন শেখ হাসিনা। তিনি বাংলাদেশের সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার যে ইতিবাচক সম্ভাবনাও দেখেছেন তাদের মধ্যে। আর এ গতি স্বচ্ছ রেখে দেশের উন্নয়নের ভিত্তি মজবুত রাখতে ও জনগণের জীবনমান বাড়াতে রাজনৈতিক অঙ্গনে সঠিক সময়েই তরুণদের দু’দিকের ভারসাম্য নিপুণভাবে নিয়ন্ত্রণ করছেন। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে প্রস্তুত করতেই মন্ত্রিসভায় নতুনদের জায়গা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ‘নতুনদের মন্ত্রী বানিয়েছি, এর মানে এই নয় যে পুরোনোরা ব্যর্থ ছিলেন। পুরোনোরা সফল ছিলেন বলেই দেশ আজ অনেক দূর এগিয়েছে। নতুনদের বানিয়েছি ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে প্রস্তুত করার জন্য। পুরোনোদের সফলতাকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।’ প্রধানমন্ত্রীর এমন সিদ্ধান্তের ফলে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন, আগামী বিশ বছরে বাংলাদেশ সত্যিই সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাবে। তারা মনে করছেন তরুণদের উদ্যোগে প্রান্তিক মানুষেরা শিল্প ও ব্যবসা বাণিজ্যে উদ্যোক্তার পরিমাণ বাড়বে। সহানুভূতি পাবেন শ্রমিকরা, জীবন-যাপনে পাবেন ন্যূনতম সুবিধাও। বাড়বে মালিক-শ্রমিক সম্পর্কও। দেশের রফতানি আয়ের সবচেয়ে বড় উৎস পোশাক শিল্প। প্রায় ৩৬ লাখ শ্রমিক কাজ করছেন এখানে। শতকরা ৮০ ভাগের বেশি রফতানি আসে শুধু এ খাত থেকে। দেশের অর্থনীতির চাকা ঘুরাতে দ্বিতীয় অবস্থানে থেকে যারা অবদান রাখছেন, তাঁরা প্রবাসী শ্রমিক। ৬৭ লাখের বেশি শ্রমিক কাজ করছেন বিভিন্ন দেশে। তাঁদের পাঠানো আয়ের ওপর নির্ভর করে দেশে আর্থিক লেনদেনের ভারসাম্য বজায় রয়েছে। আর ১৬ কোটি মানুষের দেশটিকে খাদ্যে প্রায় স্বয়ংসম্পূর্ণ করে রেখেছেন যারা, সেই কৃষকদের অবদানও মনে রাখতে হবে। তাদের শ্রম বাঁচিয়ে দিয়েছে সরকারের অনেক বৈদেশিক মুদ্রা। অথচ শ্রমিক-কৃষকদের জীবনই এদেশে সবচেয়ে বেশি বিপন্ন। স্বাস্থ্যহীনতার ঝুঁকি তো তাদের প্রায় নিয়তির মতো, সঙ্গে রয়েছে মৃত্যুঝুঁকি। প্রবাসী শ্রমিকরাও যথেষ্ট নিরাপদ নন। যেসব দেশে তারা যাচ্ছেন, সেসব দেশের আইনকানুন ভালো করে বুঝে চলার মতো শিক্ষা তাদের অনেকের থাকে না। যে জন্য প্রবাসে প্রায়ই বিপদে পড়তে হয়। এ বিপুল জনগোষ্ঠীর জীবন ঝুঁকি মুক্ত না হলে সামনের সময়ে দেশের অর্থনীতি ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। রাজনীতির শীর্ষ পর্যায়ে তরুণদের অংশগ্রহণে দেশের শিক্ষা খাত থেকে শুরু করে আমদানি-রফতানি, বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন, কৃষিখাতে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ, স্বাস্থ্য ঝুঁকি কমিয়ে আনাসহ যাবতীয় অগ্রগতিতে বিশেষ ভূমিকা রাখবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
dainikbandarban.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়