শনিবার ০৫ অক্টোবর ২০২৪ ||
আশ্বিন ২০ ১৪৩১
|| ৩০ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬
দৈনিক বান্দরবান
প্রকাশিত: ৭ জানুয়ারি ২০১৯
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শোচনীয় পরাজয়ের পর লন্ডন থেকে তারেক রহমানের নির্ধারিত জনপ্রতি ২৫ লাখ টাকা করে জরিমানা দিতে ব্যর্থ হওয়া বিএনপি নেতাদের সম্প্রতি শুরু হওয়া পোশাক শ্রমিকদের আন্দোলনকে সরকারবিরোধী আন্দোলনে রূপান্তর করার শর্তে জরিমানা মওকুফ করার সুযোগ দিয়েছেন বিএনপি নেতা তারেক রহমান। তারেক রহমানের নির্ধারিত জরিমানা হাতেগোনা ক’জন নেতা লন্ডনে পাঠালেও বেশিরভাগ নেতা পাঠাতে অস্বীকৃতি জানালে তারেক এই অভিনব কৌশল অবলম্বন করে দুধের স্বাদ ঘোলে মেটাতে চাইছেন বলে জানা গেছে। যুক্তরাজ্য বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কয়ছর এম আহমেদের বিশ্বস্ত একজন নেতার বরাতে এ তথ্যের সত্যতা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
লন্ডন বিএনপির বিভিন্ন দায়িত্বশীল সূত্রে জানা যায়, নির্বাচনে শোচনীয় পরাজয়ের পর ক্ষুব্ধ তারেক রহমান যেকোন ইস্যুতে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের উপর প্রতিশোধ নিতে চান। যেকোন ইস্যুকে সরকার পতন আন্দোলনের রূপ দিয়ে তারেক রহমান বিএনপিকে ক্ষমতায় বসিয়ে দেশে ফিরে প্রতিশোধ নিতে চান। সেই বিষয়ে বিশদ আলোচনার জন্য ৬ জানুয়ারি সন্ধ্যায় লন্ডনস্থ কিংস্টন এলাকার বাসায় জরুরি এক বৈঠকের আয়োজন করেন তারেক রহমান। সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাজ্য বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুল হামিদ চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক কয়ছর এম আহমেদ, সহ-দপ্তর সম্পাদক সেলিম আহমেদসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। আলোচনার এক পর্যায়ে আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারের পতন ঘটিয়ে বিএনপি-জামায়াত জোটকে ক্ষমতায় ফিরিয়ে আনার জন্য বিভিন্ন পরিকল্পনার বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। এসময় বাংলাদেশের চলমান পোশাক শ্রমিকদের আন্দোলনকে সরকারবিরোধী আন্দোলনের চূড়ান্ত রূপ দেয়ার বিষয়ে কয়ছর এম আহমেদ প্রস্তাব দিলে তারেক রহমান এক কথায় রাজি হয়ে যান।
জানা যায়, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শোচনীয় হারের পর দিশেহারা বিএনপি সরকার পতনের জন্য ইস্যু পাচ্ছিলো না। এছাড়া তারেক রহমান নির্বাচনে শোচনীয়ভাবে পরাজিত প্রার্থীদের বিএনপির সম্মানহানির জন্য জনপ্রতি ২৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ বাবদ লন্ডনে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। এরইমধ্যে মাত্র ৫ জন বিএনপির হেভিওয়েট নেতা টাকা পাঠিয়ে দলীয় পদ রিনিউ করতে সক্ষম হয়েছেন। তবে অধিকাংশ নেতাই ব্যবসা-বাণিজ্যে ক্ষতি, দলীয় চাঁদা সংগ্রহে ভাটা পড়ে যাওয়ার বিষয়ে অভিযোগ করে লন্ডনে টাকা পাঠাতে অস্বীকৃতি জানান। পরবর্তীতে তারেক রহমান টাকা পাঠানোর পরিবর্তে পোশাক শ্রমিকদের আন্দোলনে বিনিয়োগ করে এটিকে সরকারবিরোধী আন্দোলনের চূড়ান্ত রূপ দেয়ার জন্য বিশেষ আদেশ দেন। আন্দোলন যদি সফল হয় তবে বিএনপির পরাজিত নেতাদের জরিমানা মওকুফ করে দেয়ারও ঘোষণা দিয়েছেন। বৈঠকের পর তারেক রহমান নিজে মির্জা ফখরুল এবং মির্জা আব্বাসকে ফোন করে তার আদেশ পালনের জন্য হুকুম দেন।
লন্ডন বিএনপির ওই কর্মী আরো জানান, তারেক রহমানের এই ঘোষণা এরইমধ্যে লুফে নিয়েছেন বিএনপির বিত্তশালী নেতা আব্দুল আউয়াল মিন্টু। আমরা জানতে পেরেছি, ৭ জানুয়ারি ঢাকার দু’জন শ্রমিক দলের নেতা মিন্টু সাহেবের কাছ থেকে ১০ কোটি টাকা নিয়ে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন। এরইমধ্যে আন্দোলন তীব্র রূপ ধারণ করেছে। আন্দোলনটিকে পুঁজি করে সাধারণ মানুষদের সম্পৃক্ত করে বিএনপি সরকারকে গদি থেকে নামাতে সমর্থ হবে বলেও বিশ্বাস করেন তারেক স্যার।
এদিকে পোশাক শ্রমিকদের আন্দোলনে অর্থ বিনিয়োগ এবং দুজন বিএনপি নেতাদের আন্দোলনে নির্দেশ দেয়ার বিষয়ে জানতে আব্দুল আউয়াল মিন্টুকে একাধিকবার টেলিফোন করে পাওয়া যায়নি। পরবর্তীতে অফিসের নাম্বারে যোগাযোগ করা হলে, আব্দুল আউয়াল মিন্টুর সহকারি জানান-স্যার দুদকের মানি লন্ডারিং মামলা নিয়ে ঝামেলায় আছেন। তিনি গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে চান না।
dainikbandarban.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়