রোববার ০৬ অক্টোবর ২০২৪ ||
আশ্বিন ২০ ১৪৩১
|| ০১ রবিউস সানি ১৪৪৬
দৈনিক বান্দরবান
প্রকাশিত: ১ জুন ২০২১
মুক্তিযোদ্ধাদের মাসিক ভাতা আরও আট হাজার টাকা করে বাড়িয়ে ২০ হাজার টাকায় উন্নীত করতে যাচ্ছে সরকার। এ জন্য আসছে অর্থবছরের (২০২১-২০২২) বাজেটে প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ চেয়েছে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়। অর্থ মন্ত্রণালয়ে এ সংক্রান্ত প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। বাজেটে প্রস্তাব অনুমোদন হলে চলতি বছরের জুলাই থেকে বৃদ্ধিপ্রাপ্ত ভাতা পাবেন সাধারণ মুক্তিযোদ্ধারা। একইভাবে তারা দুই ঈদে দুটি উৎসব ভাতা এবং বিজয় দিবস ও নববর্ষ ভাতাও পাবেন। আগামী ৩ জুন জাতীয় সংসদে বাজেট উপস্থাপনের কথা রয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে মুক্তিযুদ্ধবিষয়কমন্ত্রী আ. ক. ম. মোজাম্মেল হক সমকালকে বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ আগ্রহে মুক্তিযোদ্ধা ভাতা বাড়ানোর জন্য এবারের বাজেটে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। আশা করছি, আগামী জুলাই থেকে তারা ২০ হাজার টাকা ভাতা পাবেন।' বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা এ পর্যন্ত চার দফায় বাড়িয়ে ৯০০ টাকা থেকে ১২ হাজার টাকা করা হয়েছে। নতুন প্রস্তাব অনুমোদন হলে তা হবে পঞ্চম ধাপে বৃদ্ধি। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি গণভবন থেকে এক ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফের মুক্তিযোদ্ধা ভাতা বাড়িয়ে ২০ হাজার টাকা করার ঘোষণা দেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'এখন আমার মনে হয় ১২ হাজার টাকা কিছুই নয়। মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকার নিচে অনেক স্লট (ধাপ) রয়েছে। আমরা এই তালিকার নিচের স্লটগুলোকে এক জায়গায় নিয়ে এসে টাকার পরিমাণ বাড়িয়ে ২০ হাজার করব।' মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর ওই ঘোষণা অনুসারেই মুক্তিযোদ্ধা ভাতা বাড়ানো হচ্ছে। তবে প্রধানমন্ত্রী যে স্লটগুলোকে সমন্বয় করার প্রস্তাব করেছেন তা এখনও করা হয়নি। এ নিয়ে কাজ চলছে। প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন পেলে তা করা হবে। তবে এখন সাধারণ মুক্তিযোদ্ধারা ২০ হাজার টাকা ভাতা পাবেন। সঙ্গে বিদ্যমান কাঠামো অনুযায়ী উৎসবসহ অন্যান্য ভাতাও পাবেন। প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাব অনুযায়ী খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধাসহ অন্যদের ভাতা পুনর্বিন্যাস করা হবে কিনা, এ নিয়ে সংশ্নিষ্ট বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারগুলোর মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা সমকালকে বলেন, বিষয়টি স্পর্শকাতর। যেসব ধাপে মুক্তিযোদ্ধারা ২০ হাজার টাকার উপরে আগে থেকেই ভাতা পেয়ে আসছেন তাদের ভাতা কমানো হলে বিব্রতকর পরিস্থিতি দেখা দেবে। কারণ বঙ্গবন্ধুর আমলেই খেতাবপ্রাপ্ত বীরশ্রেষ্ঠ, বীরবিক্রম, বীরউত্তম ও বীরপ্রতীক পদক বিজয়ীরা নানা ধাপে ভাতা পেতেন। পরে সাধারণ মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতার আওতায় আনা হয়। তাই খেতাবপ্রাপ্ত এবং সাধারণ মুক্তিযোদ্ধারা এক বিষয় নয়। তাই ভাতার স্তর কমানোর বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তের বিষয়। তার অনুমোদন ছাড়া মন্ত্রণালয় আগাম কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করবে না। সূত্র জানায়, আসন্ন বাজেটে মুক্তিযোদ্ধা ভাতা ২০ হাজার টাকা করা হলেও মন্ত্রণালয়ের এ খাতে বরাদ্দ তেমন একটা বাড়ছে না। কারণ মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নতুন তালিকায় আগের প্রায় ২৩.২৭ শতাংশ নাম ভাতার তালিকা থেকে বাদ পড়েছে। এ জন্য নতুন করে অধিক বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে না। এই খাতে ২০১৯-২০ ও ২০২০-২১ অর্থবছরে বছরপ্রতি ৩ হাজার ৩৮৫ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুসারে, দেশে দুই লাখ ৩৮ হাজার ৩৮৭ জন গেজেটভুক্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা থাকলেও যাচাই-বাছাইয়ের পর বর্তমানে চূড়ান্ত বীর মুক্তিযোদ্ধার তালিকা প্রকাশ করা হচ্ছে। এর আওতায় গত ২৫ মার্চ এবং ৯ মে দুই ধাপে ১ লাখ ৫৪ হাজার ৫২৫ জন বীর মুক্তিযোদ্ধার তালিকা প্রকাশ করা হয়। এই কার্যক্রম এখনও চলমান রয়েছে।
dainikbandarban.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়