দেশি-বিদেশি পর্যটকদের পার্বত্য চট্টগ্রাম এখন মূল আকর্ষণ : উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা

পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা বলেছেন, এবারের রোজার ঈদে পার্বত্য চট্টগ্রামে যে পরিমাণ টু্রিস্ট এসেছেন, তাদের সেবা দিতে জেলা প্রশাসনকে স্টেডিয়াম খালি করে দিতে হয়েছে। দেশি-বিদেশি পর্যটকদের পার্বত্য চট্টগ্রাম এখন মূল আকর্ষণ। পার্বত্য চট্টগ্রামের উদ্যোক্তাদের প্রয়োজন টুরিস্টদের সেবা দানের দিকে মনোনিবেশ করা।
রবিবার (৬ এপ্রিল) বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে বান্দরবান জেলার উদ্যোক্তাদের সাথে মত বিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা এসব কথা বলেন। উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা বলেছেন, উদ্যোক্তাদের সহযোগিতায় সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। নতুন নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টি করা আর তাদের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতির চাকাকে আরো গতিশীল করতে হবে। উপদেষ্টা তরুণ প্রজন্মকে আহবান জানিয়ে বলেন, নিজের ভাগ্য উন্নয়নে পরনির্ভরশীলতা ছেড়ে উদ্যোক্তা হিসেবে কাজ করে সমাজে প্রতিষ্ঠিত হতে হবে। সুশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে আদর্শ ও উন্নত পার্বত্য চট্টগ্রাম গড়ে তুলতে শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
এসময় সভায় উদ্যোক্তারা পার্বত্য এলাকায় যোগাযোগ ব্যবস্থার আরো উন্নয়ন, নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ, দ্রব্যমূলোর দাম নিয়ন্ত্রণে রাখা ও সহজ শর্তে ব্যাংক লোন পেতে সরকারের কাছে আহবান জানান। উপদেষ্টা এ প্রসঙ্গে বলেন, এই গ্রীষ্মকালে এখন পর্যন্ত দেশে কোনো বিদ্যুতের ঘাটতি দেখা যায়নি। বাংলাদেশের মানুষ এবারের রোজাটা খুব ভালোভাবে করতে পেরেছেন। প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখতে গিয়ে উপদেষ্টা আরও বলেন, এসময়ে বেগুনের কেজি কী ২০০ টাকা ছিল? সহনীয় পর্যায়ে ছিল। আমরা সহনীয় পর্যায়ের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। এসময়ে জিনিসপত্রের দাম বাড়ে। কিন্তু এবার এত বেশি বাড়েনি। দেশের নাগরিকদের নিরাপত্তা ব্যবস্থার কথা বলতে গিয়ে উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা বলেন, আমরা পার্বত্য অঞ্চলের প্রতিজনের নিরাপত্তা বিধান করতে চাই। আমরা প্রত্যেককে নিরাপত্তা দিয়ে যেতে চাই।
উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা বলেন, গুণগতমানের শিক্ষা আমাদের অবশ্যই নিয়ে আসতে হবে। না হলে আমরা প্রতিযোগিতায় টিকব না। এসময় সুপ্রদীপ চাকমা আরো বলেন, আমাদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হল সাধারণ জনগণের জীবনমান উন্নয়নে কাজ করা। তিনি আরও বলেন, আমাদের সমাজের সবাইকে নিয়ে চিন্তা করতে হবে, কে কোন জাতি তা মুখ্য নয়, সবাই মানুষ আর মানুষের জন্য আমাদের কাজ করতে হবে। আমরা পার্বত্য অঞ্চলে কোয়ালিটি এডুকেশন নিশ্চিত করতে চাই। পাহাড়ের পানি সংকট দুরীকরণে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষাকারী উদ্ভিদ ও প্রচুর পরিমাণে বাঁশ লাগানোর জন্য উপদেষ্টা সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহবান জানান এবং বৃক্ষ নিধন রোধ করে পাহাড়ে পানির সমস্যা সমাধানে পার্বত্য জেলা পরিষদকে আরো অগ্রণী ভূমিকা রাখার নির্দেশ দেন।
পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা পার্বত্য চট্টগ্রামের কৃষকদের কৃষি বিভাগের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করার অনুরোধ জানান। তিনি স্বাস্থ্য বিভাগকে মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে পার্বত্য বাসীদের চিকিৎসা সেবা চালিয়ে যাওয়ার জন্য অনুরোধ জানান। তিনি সমাজের সকলস্তরে উন্নয়ন পৌঁছে দেয়া এবং সকলের মানসম্মত জীবনধারণ ও সঠিকভাবে মৌলিক চাহিদাগুলো পূরণে সহায়ক ভূমিকা রাখতে সংশ্লিষ্টদের আরো দায়িত্বশীলভাবে কাজ করার আহবান জানিয়েছেন।
মতবিনিময় সভায় বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক থানজামা লুসাই, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রালয়ের যুগ্মসচিব কংকন চাকমা, জেলা প্রশাসক শামীম আরা রিনি, পুলিশ সুপার শহিদুল্লাহ কাওছার, জেলা পরিষদের মুখ্য নিবার্হী কর্মকর্তা নজরুল ইসলামসহ সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের উর্ধতন কমর্র্কতা এবং উদ্যোক্তারা উপস্থিত ছিলেন।