শনিবার ০৬ জুলাই ২০২৪ ||
আষাঢ় ২২ ১৪৩১
|| ২৮ জ্বিলহজ্জ ১৪৪৫
দৈনিক বান্দরবান
প্রকাশিত: ৪ ডিসেম্বর ২০১৮
সরকারের নির্দেশেই রিটার্নিং কর্মকর্তারা বিএনপিসহ জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও ২০ দলীয় জোটের জনপ্রিয় প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র বাতিল করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। এদিকে রিজভীর অভিযোগকে ভিত্তিহীন ও মিথ্যাচার এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে সমালোচনা করেছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। মূলত রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া বিএনপি নির্বাচনের পূর্বে নিজেদের অপকর্মের পরিণতি ক্ষমতাসীনদের ঘাড়ে চাপাতেই এসব অভিযোগ করছে বলেও মন্তব্য করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
৩ ডিসেম্বর বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিএনপির নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এ অভিযোগ করেন। তিনি অভিযোগ করেন যে, টার্গেট করে ৫০ জনের মতো দলের হেভিওয়েট জনপ্রিয় নেতা ও সাবেক এমপিদের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। এদিকে বিভিন্ন গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, সাজাপ্রাপ্ত আসামি, দুর্নীতি মামলার আসামি, ঋণখেলাপি, বিভিন্ন ফৌজদারি মামলার আসামি ও দলীয় মহাসচিবের স্বাক্ষর জাল করার অভিযোগে বেগম জিয়াসহ বিএনপি জোটের ৮০ জন প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল করেছে নির্বাচন কমিশন।
যৌক্তিক কারণে প্রার্থিতা বাতিলের বিষয়টিকে বিএনপির রাজনৈতিক দেউলিয়াত্বের বহিঃপ্রকাশ দাবি করে রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বলেন, নির্বাচন কমিশন যথাযথ কারণে বিএনপি জোটের প্রার্থীদের মনোনয়ন বাতিল করেছে। বিষয়টিকে নির্বাচন কমিশনের সফলতা বলা যেতে পারে। প্রার্থিতা বাতিল নিয়ে বিএনপি জাতির সঙ্গে প্রতারণা করছে। আমরা সকলেই জানি, যাদের মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে তারা সাজাপ্রাপ্ত আসামি, চিহ্নিত দুর্নীতিবাজ, ঋণখেলাপি, বিভিন্ন ফৌজদারি মামলার আসামি। এসব চিহ্নিত অপরাধীদের ভোটের সুযোগ করে দিলে তা হবে অপরাধীদের পৃষ্ঠপোষকতার শামিল। বিএনপি-জামায়াত জোটের বেশিরভাগ রাজনীতিবিদ লোভী এবং আদর্শবিচ্যুত দেশবিরোধী শক্তিদের এজেন্ট। নির্বাচন কমিশন এদের বেইমানি ও প্রতারণা করা থেকে বিরত রাখতে সক্ষম হয়েছে। এবার দেশবাসীকে এসব চিহ্নিত চোর-দুর্নীতিবাজদের রুখে দেয়ার দৃঢ় প্রত্যয় গ্রহণ করতে হবে। আমি মনে করি, এই দেশে চোর-বাটপার এবং প্রতারকদের রাজনীতি করার অধিকার খর্ব করে দেয়া উচিত।
বিষয়টিকে বিশদভাবে ব্যাখ্যা করে স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ড. তোফায়েল আহমেদ বলেন, রাজনীতিবিদরা হলেন দেশের উন্নয়নের কাণ্ডারি। তাদের সৎ ও উন্নয়নমুখী কর্মকাণ্ডের কারণে দেশ এগিয়ে যায় কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে। কিন্তু আমাদের দেশের রাজনীতিবিদ বিশেষ করে বিএনপি-জামায়াত জোটের মতো রাজনৈতিক শক্তিগুলোর অপরাজনীতির কারণে দেশ বার বার পিছিয়ে গিয়েছে। আমি এক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনকে ধন্যবাদ দেব- সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার জন্য। অথচ বিএনপির অনেক নেতা চিহ্নিত দুর্নীতিবাজদের মনোনয়ন বাতিলের ঘটনাটি নিয়ে রাজনীতি করার চেষ্টা করছেন। বিএনপি-জামায়াত জোটের তরফ থেকে মিথ্যাচার ছড়ানো হচ্ছে। এসব চোর-দুর্নীতিবাজরা যদি নির্বাচন করে প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ পান তবে নির্ঘাত দেশ রসাতলে যাবে। হাস্যকর বিষয় হলো, বিএনপি নিজেদের অকৃতকার্যের দায়ভার ক্ষমতাসীনদের ঘাড়ে চাপিয়ে ভোটারদের সমবেদনা পাওয়ার অপচেষ্টা করছে। তবে বিএনপি নেতাদের মনে রাখা উচিৎ, সাধারণ ভোটাররা এখন অনেক সচেতন। তারা উন্নয়নের পক্ষেই তাদের চিন্তিত মতামত দেবেন। দেশ পুনরায় দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হতে চায় না। প্রার্থী রক্ষায় বিএনপি ৩০০ আসনে ৬৯৬ জনকে মনোনয়ন দিয়েও তাদের অসৎ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পারেনি।
dainikbandarban.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়