শনিবার ০৫ অক্টোবর ২০২৪ ||
আশ্বিন ২০ ১৪৩১
|| ৩০ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬
দৈনিক বান্দরবান
প্রকাশিত: ৮ ডিসেম্বর ২০১৮
প্রাণ সঞ্চালনকারী আজ অবহেলিত। বলা হচ্ছে দেশের সদ্য গঠিত নতুন রাজনৈতিক দল ঐক্যফ্রন্টের কথা। পুরাতন জনসমর্থিত দলগুলোর সাথে নির্বাচনী দৌড়ে বেশি দূর এগোতে পারবে না। এজন্য তারা সিদ্ধান্ত নেয় আসন্ন নির্বাচনে কোনো পুরাতন দলের ছায়া হয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে। অর্থাৎ বট গাছের ছায়া তলে যেভাবে ছোট পরগাছা বেড়ে ওঠে সেভাবে আরকি। এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়ে বট গাছ হিসেবে তারা পছন্দ করে বিএনপিকে।
কিন্তু বিএনপির অবস্থাটা বিলুপ্ত প্রায় দেবদারু গাছের ন্যায়। খালেদা জিয়া কারাগারে যাওয়ার পর অনেকটা নিশ্চিহ্নের পথে চলে যায় বিএনপি। তার অপরিবর্তে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন হিসেবে ঘোষণা করা হয় তারেকের নাম। কিন্তু মামলার জন্য কারাবন্দি হওয়ার ভয়ে দেশে আসছেন না মামলাওয়ালা তারেক। তিনি দলের জন্য দিক নির্দেশনা দিতে না পারলেও কীভাবে অবৈধ ভাবে টাকা আত্মসাৎ, উড়ো খবর রটানো যায় , মিথ্যাচার ছড়ানো যায় এ নিয়ে খুব ভালো দিক নির্দেশনা দিতে পারেন। দল রসাতলে গেলেও এ নিয়ে খুব বেশি চিন্তিত নন সেই খাম্বা তারেক।
বিএনপির অবস্থা এতটাই ভঙ্গুর ছিল যে খালেদার মুক্তির আন্দোলনের জন্য ডাক দিয়েও তারা চার দেয়ালের বাহিরে বের হতে পারেনি। দলের ত্যাগী নেতাকর্মীর অভাব এবং তৃণমূলের নেতাকর্মীরা নিজেদের নিয়ে ব্যস্ত থাকাসহ ক্ষমতার এক অদৃশ্য লোভ আঁকড়ে ধরে বিএনপিকে। এরকম নানা কারণে গড়ায়নি খালেদার মুক্তির আন্দোলন। ফলে দিন দিন নিষ্প্রাণ হয়ে পড়ে বিএনপি।
অপরদিকে বিএনপি মনে করে এই ধুঁকতে থাকা দলে যদি নতুন কোনো দলের মাধ্যমে নেতাকর্মী বাড়ানো যায় তাহলে কাজটা মন্দ হয় না। সেই সাথে রাজনৈতিক অঙ্গন থেকে দূরে থাকার ফলে বেশ কয়েকদিন চটকদার সংবাদের মাধ্যমে শিরোনাম হওয়া হয়নি। একটু জনগণের মুখে দলের নাম উচ্চারিত ও নতুন দলের উপর ক্ষমতা প্রয়োগের আশায় দলে নেয়া হয় ঐক্যফ্রন্টকে। নতুন দলের নামের সাথে মিল রেখে বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টের ভেতর বেশ ঐক্যও দেখা যায়। কিন্তু এই ঐক্য বেশি দিন স্থায়ী হয়নি। কারণ নির্বাচনের জন্য ঐক্যফ্রন্ট বিএনপির কাছে ১০০টি আসন আবদার করে। আর এ নিয়েই চির ধরে বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টের সম্পর্কের। বিএনপির মতে নতুন একটি দলের ক্ষেত্রে এতগুলো আসনের কী দরকার? এছাড়াও বিএনপির নেতাকর্মীরা আরো মনে করেন ধীরে ধীরে বিএনপির নেতৃত্ব যদি ঐক্যফ্রন্ট ভিত্তিক হয়ে যায় তাহলে তাদের এত দিনের ক্ষমতা হাত ছাড়া হয়ে যাবে।
অবশেষে বিএনপি ঐক্যফ্রন্টকে ১৮টি আসনে মনোনয়ন করেছে। ঐক্যফ্রন্টের নেতাকর্মীরা খেয়াল করেন জামায়াতকে মনোনয়ন করে ২৫টি আসনে। এ থেকে ঐক্যফ্রন্টের নেতা কামাল বুঝে নেন যে জামায়াতের থেকে তাদেরকে কম মূল্যায়ন করা হচ্ছে। বিএনপি ঐক্যফ্রন্টকে ভাঙা কুলার মতো ব্যবহার করেছে। যেই দল বিপদের দিনে বিএনপির পাশে থেকে দলে অক্সিজেনের মতো কাজ করেছেন সেই দলকে আজ অবহেলা করছে বিএনপি। এজন্য ড. কামাল ও আ স ম রব দূরত্ব সৃষ্টি করেছে বিএনপির সাথে। এখন দেখার বিষয় দুই দলের এই দূরত্ব নিয়ে একসাথে কতদিন এগোয় !
dainikbandarban.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়