বৃহস্পতিবার ০৪ জুলাই ২০২৪ ||
আষাঢ় ১৯ ১৪৩১
|| ২৬ জ্বিলহজ্জ ১৪৪৫
দৈনিক বান্দরবান
প্রকাশিত: ১ ডিসেম্বর ২০১৮
তাওবা আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের অন্যতম উপায়। এ তাওবার মাধ্যমেইমানুষ নিজেকে সব অন্যায় অপরাধ থেকে মুক্ত রাখে। এ কারণেই ইলমের অধিকারী আলেমগণ বলেন, ‘(মানুষের) প্রতিটি গোনাহ থেকে তাওবা করা আবশ্যক কর্তব্য (ওয়াজিব)।> মানুষের কোনো গোনাহ বা অপরাধ যদি আল্লাহর সঙ্গে হয়ে থাকে এবংবান্দার কোনো হক বা অধিকারের সঙ্গে সম্পৃক্ত না হয়, তবে সে কাজের গোনাহ থেকে মুক্ত থাকতে ৩টি শর্ত পালন জরুরি। শর্ত ৩টি হলো-প্রথম শর্ত :বান্দা সব সময় গোনাহ থেকে বিরত থাকবে এ চিন্তাস্থির করা।দ্বিতীয় শর্ত :যে গোনাহের জন্য তাওবা করা, সে গোনাহ সংঘটিত হওয়ার কারণে অন্তর থেকে অনুতপ্তবা দুঃখ প্রকাশ করা।তৃতীয় শর্ত :এ গোনাহটি যেন পুনরায় করা না হয় সে ব্যাপারে দৃঢ় সংকল্প গ্রহণ করা।যদি কোনো মানুষের মনে উল্লেখিত ৩টি শর্তের কোনোটি অপূর্ণ থাকে, তবে তার তাওবা শুদ্ধ হবে না।> কিন্তু মানুষের কোনো গোনাহ বাঅপরাধ যদি আল্লাহর সঙ্গে না হয়েঅন্য কোনো মানুষের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়, তবে সেক্ষেত্রে উল্লেখিত তিনটি শর্তের সঙ্গে অপরাধী বা গোনাহগার ব্যাক্তিকে আরো একটি শর্ত যুক্ত করে তা পালন করতে হবে। আর তাহলো-চতুর্থ শর্ত :সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির কাছ থেকে (যার সঙ্গে অপরাধ বা গোনাহটি জড়িত) ক্ষমা প্রার্থনা করা। যেমন- কোনো ব্যক্তি ধন-সম্পদ বা কোনো জিনিসঅন্যায়ভাবে ছিনিয়ে নেয়া হয় তবে তাকে তা ফেরত দিতে হবে। অনুরূপভাবে যদি কারো প্রতি মিথ্যা অপবাদ আরোপ করা হয় তবে অপরাধীকে নির্ধারিত শাস্তি (হদ)ভোগ করতে হবে অথবা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির কাছ থেকে ক্ষমা চেয়ে নিতে হবে।মনে রাখতে হবেসব গোনাহের কাজ থেকেই তাওবা করতে হবে। আর তাওবার ব্যাপারে মহান আল্লাহ তাআলা নির্দেশ দিয়েছেন। আল্লাহ বলেন-‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা সবাই আল্লাহর কাছে তাওবা কর, তাহলে তোমরা কল্যাণ লাভ করবে।’ (সুরা নুর : আয়াত ৩১)অন্য আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন-‘তোমরা আপন প্রভুর কাছে ক্ষমা চাও, অতঃপর তার কাছে তাওবা কর।’ (সুরা হুদ : আয়াত ৩১)খাঁটি বা একনিষ্ঠতার সঙ্গে উল্লেখিত শর্তগুলোর সঙ্গে তাওবা করার নির্দেশ দিয়ে আল্লাহবলেন-‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহর কাছে খাঁটি মনে তাওবা (তাওবাতুননাসুহা) কর।’ (সুরা তাহরিম : আয়াত৮)আল্লাহ তাআলা কুরআনে পাকে আয়াত নাজিল করে প্রিয়নবির আগের-পরের সব গোনাহ ক্ষমা করে দিয়েছেন মর্মে ঘোষণা দিয়েছেন। যদিও প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ছিলেন নিষ্পাপ। তারপরও উম্মতের শিক্ষার জন্য প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঘোষণা করেন-হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণনা করেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি, আল্লাহর শপথ! আমি প্রতিদিন সত্তর বারেরও বেশি তাওবা করি এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই।’ (বুখারি)সুতরাং গোনাহমুক্ত জীবন লাভে তাওবার বিকল্প নেই। গোনাহ হোক আর না হোক তারপরও বারবার অনাকাঙ্খিত অন্যায়ের কাজের জন্য সব সময় তাওবা করা একান্ত আবশ্যক।আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে সব সময় তাওবায়ে নাসুহা করার তাওফিক দান করুন। কুরআন-সুন্নাহর হুকুম যথাযথ পালন করারতাওফিক দান করুন। আমিন।
dainikbandarban.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়